পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে লক্ষণীয় বিষয়
তবে ল্যাপটপের দাম অনেক বেশি হওয়ার কারণে আমরা অনেকেই নতুন ল্যাপটপ কিনতে পারি না। তাই পুরাতন ল্যাপটপ কিনে থাকি কিন্তু কেনার ক্ষেত্রে অনেক ভয় কাজ করে ;যে ল্যাপটপ কিনে যদি ঠকে জান তাহলে পুরো টাকাটা লস হয়ে যাবে ।তাই আজকে আমি আপনাদের ল্যাপটপ কেনার আগে কি কি বিষয় লক্ষ করতে হবে, এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সূচিপত্রঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে লক্ষণীয় বিষয়
- পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে লক্ষণীয় বিষয়
- পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয়
- পুরাতন ল্যাপটপ কোথায় পাওয়া যায়
- ভালো ল্যাপটপ এর দাম কত
- গুরুত্বপূর্ণ কথা
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে লক্ষণীয় বিষয়
ল্যাপটপ কেনার আগে লক্ষণীয় বিষয় জেটি সেটি হল ;কোন ধরনের ল্যাপটপ আপনার জন্য উপযোগী ,অর্থাৎ আপনার কোন ল্যাপটপটি কিনলে আপনার যে কাজের জন্য ল্যাপটপ ক্রয় করছেন সেই উদ্দেশ্য কি সফল হবে।পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে আপনি যে কারণে ল্যাপটপ কিনেন না কেন অবশ্যই সেটি বিজনেস সিরিজ ল্যাপটপ হতে হবে ।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে বিজনেস ল্যাপটপ কি ? বিজনেস ল্যাপটপগুলো হলো দেশের বাইরে বিভিন্ন অফিস-আদালতে ল্যাপটপ গুলো ব্যবহার হয়ে থাকে। সেগুলো কয়েক মাস ব্যবহার করে বিক্রি করে দেওয়া হয় ।সেই বিতর্কিত ল্যাপটপগুলো দাম 70 হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ 150000 এরকম হয়ে থাকে । যা বাংলাদেশ নতুন খুব একটা বেশি আসে না।
সুতরাং পুরাতন লেপটপ আপনি অবশ্যই বিজনেস সিরিজ ল্যাপটপ গুলো কিনবেন ।যা আপনার যে কোন কাজের জন্য খুবই ভালো কনফিগারেশনের একটি ল্যাপটপ হবে ।বিজনেস ল্যাপটপ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আপনি কিনতে পারেন ,যেমন hp এর Elite Book ,dell এর Latitude ,Lenovo এর Thinkpad ইত্যাদি।এই সমস্ত বিজনেস সিরিজ ল্যাপটপ কিনলে আপনি কখনোই ঠকবেন না।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয়
এবার চলুন জানা যাক পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় বা লক্ষনীয় কাজগুলোকে ।অর্থাৎ কেনার আগে কি কি বিষয়ে ভালোমতো দেখে ক্রয় করতে হবে।
মেনুফেকচার ডেট এবং মডেল চেক
আপনি যে ল্যাপটপে কিনবেন সেটি কবে তৈরি হয়েছে সেটি ভালো করে দেখে নিন ।কেননা আপনার ল্যাপটপটি যদি অনেক পুরনো হয় সেক্ষেত্রে পারফরম্যান্স অবশ্যই কম দিবে ।তাই প্রথম ল্যাপটপ কেনার আগে ল্যাপটপের মেন পরীক্ষার ডেট এবং ল্যাপটপের মডেল চেক করে নিন ।ল্যাপটপ মেনুফেকচার ডেট দেখার জন্য অবশ্যই বায়োস সেটিংস এ যে সিস্টেম ইনফরমেশন ক্লিক করতে হবে।
করলেই আপনি সহজেই আপনার কম্পিউটার টি কপি তৈরি হয়েছে তা সম্পর্কে জানতে পারবেন ।এছাড়াও কম্পিউটারের মডেল জানার জন্য কীবোর্ড এর windows + R বাটনে চাপ দিলে ,run আসলে সেখানে dxdiag লিখে এন্টার প্রেস করলে আপনার ল্যাপটপের মডেল দেখতে পাবেন।
জেনারেশন এবং কনফিগারেশন চেক
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে আপনি কোন জেনারেশন এর ল্যাপটপ কিনছেন এটি আপনাকে দেখে নিতে হবে ।কেননা জেনারেশন যত আপডেট হবে আপনার ল্যাপটপটি পাবেন তত ভালো হবে। আপনার ল্যাপটপের জেনারেশন কত, আপনার ল্যাপটপ duel core নাকি corei3,corei5 তা দেখে নিতে হবে ,এটি চেক করার জন্য আপনি আপনার ডেক্সটপে থাকা this pc আইকনে রাইট বাটন ক্লিক করে ,প্রপার্টিজ ক্লিক করুন।
মনে রাখবেন corei5 অর্থাৎ i এরপর যে নাম্বারটি দেয়া থাকবে সেটি হচ্ছে আপনার জেনারেশন ।যেমন সেটি যদি 2000 এর ঘরে হয় তাহলে সেটি ডুয়েল কোর প্রসেসর ,যদি সেটি 3000 হয় তাহলে core i3 ,যদি পাঁচ হাজারের উপরে হয় তাহলে corei5 ইত্যাদি।
কিবোর্ড এবং SSD HDD হেলথ চেক করতে হবে
আপনি যে ল্যাপটপটি কিনছেন সেটির কিবোর্ড ঠিক আছে কিনা ,বা কিবোর্ড এর প্রতিটি কি ঠিকঠাক কাজ করে কিনা তা আপনাকে দেখে নিতে হবে ।কেননা কিবোর্ডের অনেক কি সর্টকাট হয়ে যায় অর্থাৎ নষ্ট হয়ে যায় ,কাজ করে না ।অবশ্যই কিবোর্ডের কিগুলো ভালোমতো কাজ করে কিনা দেখে নেবেন।
আরেকটি বিষয় হলো ল্যাপটপের SSD এবং HDD এর হেলথ কন্ডিশন ভালো আছে কিনা ,তা আপনি বিভিন্ন অনলাইন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে চেক করে নিবেন।চেষ্টা করবেন যেন এগুলোর হেল কন্ডিশন 100% হয়।
সাউন্ড এবং মাউথ স্পিকার চেক করতে হবে
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ল্যাপটপের সাউন্ড এবং স্পিকার। অনেক ক্ষেত্রে প্রথম ল্যাপটপের সাউন্ড সঠিকভাবে বোঝা যায় না ,কেননা ল্যাপটপে দুটি স্পিকার থাকে দুই পাশে যদি একটি স্পিকার বাজে সে ক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টি থেকে মনে হবে দুটোই বাজছে ।আপনি বুঝতে পারবেন না যে আসলে আপনার ল্যাপটপের স্পিকার ঠিক আছে কিনা ।
সেজন্য আপনাকে উইন্ডো এর ডান পাশে ঘরে থাকা স্পিকার অপশনে গিয়ে মাইক্রোফোন এবং স্পিকার চেক করে নিতে হবে।এছাড়া ভালোভাবে পরীক্ষা করার জন্য আপনি রেকর্ডিং করতে পারেন অথবা গান বাজিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন আসলে আপনার স্পিকার মাউথ স্পিকারে কথা শোনা যাচ্ছে না।
ল্যাপটপের ব্যাটারি চেক করতে হবে
ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো আছে কিনা সেটা দেখার জন্য আপনি প্রথমত ল্যাপটপটি খুলতে পারেন। দেখতে পারেন ল্যাপটপটি ফুলে গেছে কিনা যদি ব্যাটারি না ফুলে যায় থেকে দেখতে ঠিকঠাক দেখায় তাহলে ব্যাটারিটি ভালো ধরে নেওয়া যায় ।তবুও অনেক সময় ব্যাটারি হেলথ কেমন তা বুঝা যায় না ।তাই ব্যাটারি হেলথ চেক করার জন্য অনলাইনে বিভিন্ন সফটওয়্যার রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি চেক করে নিতে পারবেন।
ল্যাপটপ ক্যামেরা চেক করে নিতে হবে
ল্যাপটপের ক্যামেরা ঠিকঠাক কাজ করে কিনা তা দেখে নেওয়া ।এক্ষেত্রে আপনি আপনি যদি উইন্ডোজ টেন ব্যবহার করেন সরাসরি সার্চ অপশনে গিয়ে ক্যামেরা লিখলেই ক্যামেরা ওপেন হবে ।
আর যদি আপনি উইন্ডোজ ব্যবহার করেন ,সে ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি অনলাইনে গিয়ে ক্যামেরা টেস্ট লিখে সার্চ দিলেই আপনার ক্যামেরা টি ওপেন হবে এবং আপনি বুঝতে পারবেন আপনাকে ঠিক ঠিক আছে কিনা।
ল্যাপটপ হিটিং চেক
অবশ্যই আপনি ল্যাপটপের হিট কেমন হচ্ছে সেটি দেখে নিবেন। এটি জানতে হলে আপনি একটি হাই রেজুলেশনের ভিডিও চালাতে পারেন অনেকক্ষণ যাবৎ ।এবং দেখতে পারেন আপনার ল্যাপটপকে অভারহীটিং হচ্ছে কিনা ।এছাড়াও আপনি অনলাইনে বিভিন্ন হিটিং চেক সফটওয়্যার দাঁড়া ল্যাপটপের হিট কেমন হচ্ছে যাচাই করতে পারবেন ।যদি 50 শতাংশের বেশি হয় তাহলে বুঝবেন আপনার ল্যাপটপে সমস্যা রয়েছে।
ডিসপ্লে চেক
ল্যাপটপের ডিসপ্লে অনেক সময় ছোট ছোট ফোটা দেখা যায় বা ফাংগাস দেখা দেয় ,দেখতে খুব ক্ষুদ্র হলেও বোঝার উপায় থাকেনা ।তাই আপনার ল্যাপটপের ডিসপ্লে ঠিকঠাক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য, আপনি অনলাইনে গিয়ে ডিসপ্লে চেকার লিখে সার্চ দিলে বিভিন্ন ধরনের কালার ছবি চলে আসবে। যার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ল্যাপটপের স্ক্রিনে যদি কোনো রকম কোনো দাগ স্পট থাকে তা স্পষ্ট বোঝা যাবে।
এছাড়া যদি আপনি আপনি প্রথম ল্যাপটপ কেনার আগে ল্যাপটপের রেজুলেশন চেক করতে চান, তাহলে সেটিংসে গিয়ে ডিসপ্লে সেটিংস অপশনে ক্লিক করলেই আপনার ল্যাপটপের রেজুলেশন চেক করতে পারবেন ।সেটি হতে পারে এইচডি, ফুল এইচডি 2K অথবা 4k।
অরিজিনাল চার্জার চেক করে নিতে হবে
পুরাতন ল্যাপটপ কিনার সময় অনেকেই অরিজিনাল চার্জার প্রদান করেনা , সেক্ষেত্রে আপনি বলবেন আপনাকে যেন অরিজিনাল চার্জার যেটি আছে সেটি বিক্রি করে ।
অরিজিনাল চার্জার ছাড়া আপনার ল্যাপটপটি যখন আপনি চার্জ দিবেনতখন পুরো ল্যাপটপটি কারেন্ট হয়ে থাকবে ।অর্থাৎ যেকোন সময় আপনার ল্যাপটপের মাদারবোর্ডের পুড়ে যেতে পারে ।তাই চেষ্টা করবেন যেন অরিজিনাল চার্জার নেওয়া যায়।
বিভিন্ন ধরনের কেবল পোর্ট দেখে নেওয়া
ল্যাপটপে থাকা চারিপাশে যে ক্যাবলের পোর্টগুলো থাকে ;যেমন কিবোর্ড ,মাউস ইত্যাদি কানেক্ট করার জন্য। সেই পোর্টগুলো ভাল আছে কিনা সেগুলো অবশ্যই চেক করে নিবেন ।এবং সেও কাজ করছে কিনা তা ধৈর্য সহকারে যাচাই-বাছাই করে তারপরে প্রথম ল্যাপটপ ক্রয় করবেন।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর , ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই চেক
ল্যাপটপের যদি ফিঙ্গারপ্রিন্ট থাকে সেটি কাজ করে কিনা এবং ব্লুটুথ ডিভাইস কানেক্ট হচ্ছে কিনা, ওয়াইফাই রেঞ্জ কেমন পাচ্ছে বা ওয়াইফাই তারা আপনার ল্যাপটপটি চলছে কিনা ,সবকিছু আপনি কেনার আগে যাচাই-বাছাই করে কিনবেন।
পুরাতন ল্যাপটপ কোথায় পাওয়া যায়
বিভিন্ন শপিং মল মার্কেটে পাওয়া যায় ।যেমন ঢাকার মোতালেব প্লাজা, শাহ আলি প্লাজা ,বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় কিনতে পাওয়া যায় ।তবে একটি কথা না বললেই নয় সেটি হলো, পুরাতন ল্যাপটপ কিনার সময় অবশ্যই কোন শোরুম বা যারা দোকান থেকে বিক্রি করে সেখান থেকে কিনবেন ।
কেননা ল্যাপটপের কোন সমস্যা হলে আপনি যাদেরকে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বা ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ করতে পারবে ।আর যদি কোন ব্যক্তির কাছে নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে একটু ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
ভালো ল্যাপটপ এর দাম কত
ভালো ল্যাপটপ এর দাম ধরতে গেলে 70000 এর উপরে ।কেননা আপনি কোন কাজে এটিকে ব্যবহার করবেন এটির উপরে নির্ভর করবে ;আপনি আসলে কত ভালো ল্যাপটপ কিনতে যাচ্ছেন বা আপনার কত ভালো ল্যাপটপ প্রয়োজন ।
আপনি যদি কোনো কাজের ক্ষেত্রে ল্যাপটপ কিনেছি ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে 60 থেকে 70 হাজারের উপরে বাজেট করে ল্যাপটপ কিনতে হবে । যেন আপনার সকল কাজের জন্য উপযোগী হয় ডিলিট হয়ে গেছে বারোটা বারোটা আর আই এন আই আর আর আই এন পিয়ার।
গুরুত্বপূর্ণ কথাঃ
আপনারা হয়তো পোস্টটি পড়ে জানতে পেরেছেন যে পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে লক্ষণীয় বিষয় গুলো কি।যেকোনো পুরাতন জিনিস কেনার আগে সব সময় যাচাই-বাছাই করে কেনা ভালো ।কেননা পুরাতন জিনিস মানে সবগুলো যে ভালো হবে তা নয় তাই আপনাকে দেখে নিতে হবে।
আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url