সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম ও উপায় বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনারা কি অতিরিক্ত সিম নিয়ে চিন্তিত। চিন্তার কোন কারণ নেই এই অতিরিক্ত সিমটির রেজিস্ট্রেশন আপনি বাতিল করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম ও অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে। যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটিতে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে যা আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে বুঝতে পারবেন।
পোস্টসূচিপত্রঃআপনি যদি সিম সম্পর্কিত সকল সমস্যার সমাধান পেতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
ভূমিকা
আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বিভিন্ন অফারের জন্য অতিরিক্ত সিম কিনে থাকে। যার ফলে অফার গুলো শেষ হয়ে গেলে দীর্ঘদিন সিম অযথা পড়ে থাকে, আর সিমের প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘদিন এই সিম গুলো আপনাদের ঘরে পড়ে থাকে, যার কোন প্রয়োজন পড়ে না। অনেক সময় বেশি অতিরিক্ত সিম হয়ে গেলে আর নতুন করে সিম কেনাও যায় না।
এর জন্য আপনাকে আগের অতিরিক্ত সিম গুলোকে বাতিল করতে হবে। তাহলে আপনি নতুন সিম কিনতে পারবেন। আর এই সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার পদ্ধতি আমরা উক্ত পোস্টটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাই শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার আগে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে সিমটি কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা আছে ।এর জন্য আপনাকে সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করতে হবে। যা আমার একটু পরে আলোচনা করব। আপনারা যদি দেখেন আপনার এন আইডি কার্ড দিয়ে অনেকগুলো সিম তোলা রয়েছে, তাহলে আপনি উক্ত সিম গুলো কিছু উপায় অবলম্বন করে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারবেন বা বন্ধ করতে পারবেন। চলুন উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাকঃ
হেল্পলাইনে কল করে
ধরুন আপনার এনআইডি কার্ড দিয়ে সিম তোলা রয়েছে যেটি এখন আপনার কাছে রয়েছে। ওই সিমটি আপনি বন্ধ করতে চাচ্ছেন, তাহলে উক্ত সিমটি দিয়ে সিমের কাস্টমার কেয়ারে অর্থাৎ helpline number এ কল দিতে হবে।
কল দেওয়ার পর সিম কাস্টমার কেয়ার আপনার থেকে কিছু তথ্য চাইবে অর্থাৎ আপনার এনআইডি নাম্বার জিজ্ঞাসা করবে তথ্য ভেরিফাই করা হলে আপনার সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারবেন।
কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে
আপনার সিম যদি হারিয়ে যায় এবং অন্য ব্যক্তি আপনার সিম ব্যবহার করছে এক্ষেত্রে সিম ডিএক্টিভ বা বন্ধ করার জন্য আপনাকে নিকটস্থ সিম কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে। আপনার কাছে আইডি প্রুফ চাইবে এবং সিম বন্ধ করার কারণ জানতে চাইবে সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার সিম রেজিস্ট্রেশনটি বাতিল করতে পারবেন এবং আপনার সিম বন্ধ হয়ে যাবে।
অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার উপায়
অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার জন্য তেমন কোন নিয়ম নেই। আগের মতই নিয়ম রয়েছে। আপনি যে সিম বন্ধ করবেন সেই কাস্টমার কেয়ারে কল করতে হবে। কাস্টমার কেয়ারে কল করার জন্য ১২১ নাম্বারটি ডায়াল করবেন। কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি কল ধরলে আপনি অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
তিনি আপনাকে অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার নিয়ম বলে দিবে। এছাড়া আপনার কাছ থেকে এনআইডি প্রুফ চাইবে এবং কিছু তথ্য চাইবে। আপনি সিমটি কেন বন্ধ করবেন তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। ঠিকঠাক তথ্য দিলে আপনি অতিরিক্ত যে সিম হোক সেটি আপনি বন্ধ করতে পারবেন।
Gp সিম বন্ধ করার উপায়
আপনারা কি জিপি সিম বন্ধ করার উপায় জানতে চাচ্ছেন। প্রায় আগের মতই নিয়ম রয়েছে। আপনি জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল অর্থাৎ সিম বন্ধ মূলত দুইভাবে করতে পারবেন। প্রথমত কাস্টমার কেয়ারে কল করে বন্ধ করতে পারবেন। আর দ্বিতীয়ত আপনি সরাসরি সিম কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে জিপি সিমটি বন্ধ করতে পারবেন।
আপনি যদি জিপি সিমটি সরাসরি কল দিয়ে বন্ধ করতে চান সেই সিমটি ব্যবহার করে আপনাকে ১২১ নাম্বারটিতে ডায়াল করে কাস্টমার কেয়ারে কল দিতে হবে। কাস্টমার কেয়ার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এর প্রুফ এবং কোড জানতে চাইবে এবং কেন বন্ধ করছেন সেটি জানতে চাইবে। সবকিছু বলা হলে আপনি সিমটি বন্ধ করতে পারবেন।
এবার আসা যাক আপনি সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত হয়ে আপনার হাতে থাকা জিপি সিমটি বন্ধ করতে পারে। এর জন্য আপনাকে সরাসরি জিপি কাস্টমার কেয়ারে সিম সাথে নিয়ে উপস্থিত হতে হবে। আর অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। সেখানে আপনার সবকিছু তথ্য যাচাই করে আপনার সিমটি বন্ধ করে দিবে।
বাংলালিংক সিম বন্ধ করার নিয়ম
জিপি সিমের মত আগের এই একই নিয়মে আপনি আপনার হাতে থাকা বাংলালিংক সিমটি বন্ধ করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে বাংলালিংক সিম কাস্টমার কেয়ারে ১২১ এ কল করে আপনার যাবতীয় সমস্যাটি বলে এবং কাস্টমার কেয়ার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র কিছু তথ্য চাইবে তা দিয়ে সম্পন্ন করে আপনার বাংলালিংক সিমটি বন্ধ করতে পারবেন।
আরেকটি পদ্ধতি হলো সরাসরি বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে জাতীয় পরিচয় পত্র ও উক্ত সিম মোবাইলের সাথে নিয়ে যাবেন। সেখানে আপনার সমস্যা বলবেন এবং জাতীয় পরিচয় পত্র তথ্য দিবেন এবং আপনার সিম বন্ধ করতে পারবেন।
সিম রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন করার নিয়ম
আপনার তো সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম জেনে গেছেন তবে সিম রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন করার নিয়ম কি জানেন যদি না জেনে থাকেন আজকের এই পোস্টটিতে সেটিও জানানোর চেষ্টা করব। সিম রেজিস্ট্রেশন মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য সিমের পুরাতন মালিক ও যিনি নতুন মালিক হবেন উভয়কেই সিম কাস্টমার কেয়ারের উপস্থিত থাকতে হবে।
আর সাথে দুইজনেরই জাতীয় পরিচয়পত্র কপি এবং দুটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দরকার হবে, তবে ছবি বেশিরভাগ কাস্টমার কেয়ারে বর্তমানে দরকার হয় না। জাতীয় পরিচয় পত্র সকল কিছু তথ্য যাচাই বাছাই করে নিলে উভয়েরই ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে মালিকানা পরিবর্তন করে দেবে। ফলে আপনি সিম রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন করতে পারবেন।
তবে বর্তমানে জিপি সিম মালিকানা ট্রান্সফার করার জন্য অনলাইনে সুযোগ রয়েছে। আপনি অনলাইন থেকে জিপি সিম মালিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করা হয়ে গেলে কিছুদিন অপেক্ষা করলে সকল তথ্য ভেরিফাই করে জিপি সিম কাস্টমার কেয়ার আপনার সিমের মালিকানা পরিবর্তন করে দিবে।
রবি সিম বন্ধ করার উপায়
আপনার হাতে থাকা রবি সিম আপনি বাতিল করতে পারবেন বা বন্ধ করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কাস্টমার কেয়ারে কল করে সকল তথ্য জানাবেন। আর কাস্টমার কেয়ারে কল করার জন্য উক্ত রবি সিমটি দিয়ে 121 নাম্বারে কল করবেন।
সকল তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে আপনার সিমটি বন্ধ করতে পারবেন। আর আরেকটি নিয়ম হলো সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করা। কাস্টমার কেয়ারে সিমটি নিয়ে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র কপি দেখিয়ে এবং কারণটি বলে সিমটি বন্ধ করতে পারবেন।
সিম বন্ধ করার কোড
আপনারা অনেকেই সিম বন্ধ করার কোড সম্পর্কে জানতে চান। তবে বলে রাখা ভালো সিম বন্ধ করার কোড বলে কিছু হয় না। আপনাকে আগের মতই সিম বন্ধ করার জন্য হেল্প লাইন *16001# এ কল করতে হবে। হেল্পলাইনে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানতে চাইবে তা দিয়ে সম্পন্ন করে আপনার সিমটি বন্ধ করতে পারবেন। এছাড়া সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিম বন্ধ করতে পারবেন।
সিম রেজিস্ট্রেশন কার নামে জানার উপায়
সিম রেজিস্টেশন কার নামে করা আছে তা জানার জন্য আপনাকে ফোনের ডায়াল প্যাডে *16001# উক্ত কোডটি ডায়াল করে একটি মেসেজ আসবে, মেসেজ আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের শেষের চার সংখ্যার নাম্বার জানতে চাইবে সেটি দিয়ে ওকে ক্লিক করুন। এরপর পুনরায় মেসেজে আপনাকে জানিয়ে দিবে কয়টি সিম আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে করা হয়েছে।
সিম রেজিস্ট্রেশন চেক
সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করার জন্য প্রথমেই আপনি মোবাইল ফোনে *16001# কোডটি ডায়াল করবেন। ডায়াল করার পর আপনার ফোনে মেসেজে জাতীয় পরিচয় পত্রের বা এন আইডি কার্ডের শেষের চার সংখ্যার বা ডিজিটের নাম্বার জানতে চাইবে সেটি আপনি দিয়ে ক্লিক করুন। এরপর ফিরতি মেসেজে আপনাকে জানিয়ে দেবে যে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন আছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে। এভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করতে পারবেন।
টেলিটক সিম বন্ধ করার নিয়ম
আগের মতই আপনি সিম কাস্টমার কেয়ারে সরাসরি গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে তথ্য জমা দিয়ে আপনার হাতে থাকা বা আপনার টেলিটক সিমটি যদি হারিয়ে যায় সেটি আপনি বন্ধ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি সরাসরি হেল্পলাইনে কল করে আপনার সমস্যাটি বলে প্রয়োজনে তথ্য জমা দিয়ে সিম বন্ধ করতে পারবেন।
এয়ারটেল সিম বন্ধ করার নিয়ম
এয়ারটেল সিম বন্ধ করতে সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে যাবেন অথবা এয়ারটেল কাস্টমার কেয়ার হেল্পলাইন *16001# নাম্বারে কল করবেন। আপনার যাবতীয় সমস্যাটি বলে এনআইডি কার্ডের তথ্য জমা দিবেন এবং সকল কিছু জানা হয়ে গেলে আপনি airtel সিমটি বন্ধ করতে পারবেন। আর সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সমস্যার কথা বলে জাতীয় পরিচয় পত্র দেখিয়ে সিম বন্ধ করতে পারবেন।
এভাবে আপনার যদি কোন সিম হারিয়ে যায় সেটিও আপনি বন্ধ করতে পারেন। কারণ হারিয়ে যাওয়া সিম বন্ধ না করলে অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। অনেকেই আপনার সিম দিয়ে অনৈতিক কাজ করতে পারে। তাই আপনি হারিয়ে যাওয়া সিমটি বন্ধ করতে পারবেন।আমার উপরে নিয়মে বলে দিয়েছি।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সিম রেজিস্ট্রেশন কিভাবে বাতিল করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি কখনো অপ্রয়োজনীয় সিম থেকে থাকে সেটি আপনি বাতিল করতে পারবেন যা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আর যদি সিমটি হারিয়ে যায় তাহলে ওই সিমটি দিয়ে অনৈতিক কাজ করতে বাধা দিতে অবশ্যই আপনাকে সিমটির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হবে। আপনাদের যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন আর হারিয়ে যাওয়া সিম থেকে বিপদে সম্মুখীন যাতে কেউ না হয় তার জন্য পোস্টটিতে কমেন্ট করুন এবং শেয়ার করুন।
আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url