১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য - বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য

বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম লাভ করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র বাংলাদেশ। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য ও বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য - বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য
পোস্টসূচিপত্রঃপ্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা সম্পর্কে জানতে আমাদের পোস্টটি ওপেন করেছেন। জন্য আমার এই আর্টিকেলে আপনাকে জানাই সুস্বাগতম। আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি ১৬ই ডিসেম্বর এর নানা তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

ভূমিকা ।১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য 

বাঙালি জাতির ইতিহাস হাজার বছরের পরাধীনতার ইতিহাসে জর্জরিত। দীর্ঘ আন্দোল করে সংগ্রাম করে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের হাত থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ কে স্বাধীন করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীন করা হলেও বাঙালির এই ভূখণ্ডের প্রতি স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার তখনও ছিল না। ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির এক মহা উৎসবের দিন। এই দিনে বাঙালি পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। আজই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে ১৬ই ডিসেম্বরের নানা রকম তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস ।বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য

১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই বিজয়ের স্বাদটি বাঙালি এমনি এমনি পাইনি এজন্য নানা সংগ্রাম এবং আন্দোলন করতে হয়েছে । সংগ্রাম ও আন্দোলনের পাশাপাশি বাঙালির নানা আত্মত্যাগও স্বীকার করতে হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় ঐতিহাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম হয় স্বাধীন সার্বভৌমত্ব একটি রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসক শেষ হওয়ার পরে ভারত উপমহাদেশকে ধর্মের দিক বিবেচনা করে দুইটি ভাগে ভাগ করে দিয়েছিল। যেখানে হিন্দু রাষ্ট্র ভারত ছিল এবং অপরটি পাকিস্তান। এই পাকিস্তান এর দুটি দেশ ছিল একটি পশ্চিম পাকিস্তান এবং অন্যটি হলো পূর্ব পাকিস্তান যেটি বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ। পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলো ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট। পূর্ব বাংলা হয় পাকিস্তানের একটি অংশ যেটির নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান।

বাঙালী জনগণ মনে করেছিলো এবার বুঝি তাদের সকল আকাঙ্ক্ষা গুলো পূরণ হবে। বাঙালির চাওয়া স্বাধীনতা একটি নতুন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হবে। উন্নত একটি জাতিতে পরিণত হবেন। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের জনগণ বুঝতে পারলেন যে তাদের এই আশা গুলা পূরণ হওয়ার নয়। পাকিস্তানি শাসকবর্গ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রসমূহ গুলো সংকুচিত করা হচ্ছে।

আর যার কারণে পূর্ব পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক ভাবে তারা বঞ্চনার স্বীকার শিকার হচ্ছিল। তার পাশাপাশি ও পাকিস্তানের মানুষের সম্পদ গুলোর মাধ্যমে তারা নিজ দেশ তথা পাকিস্তানের উন্নয়ন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করে। আর এই ধারাবাহিকতাই পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি পটভূমি তৈরি করে। একশ বাহনের সালে নিজ মাতৃভাষা বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার রক্ষার্থে জীবনদান করতে হয় পূর্ব বাংলার দামাল ছেলেদের।

১৯৯৮ সালের জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ৬ দফা দাবি পেশ করেন। আর এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭০ সালে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাধারণ নির্বাচন। আর এই সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে জয় লাভ করে।

বাঙালি মনে করেছিল এই জয় লাভের মাধ্যমে পুরো পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার ইতিহাসের মোড় ঘুরবে। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকবর্গ সেটি হতে দেয়নি। পাকিস্তানি শাসক বর্গ কিছু রাজনৈতিক নেতা ও কিছু সামরিক কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে এমনভাবে বিন্যস্ত করেন যেন শাসনভার কোনভাবেই পাকিস্তানের হাতে হস্তান্তর করা না হয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে সংঘটিত হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধ । নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ হয় ১৬ই ডিসেম্বরে গিয়ে।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য

১৯৭১ সালের ৯ মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভ করে ১৬ই ডিসেম্বরে। ১৬ই ডিসেম্বরে বাঙালি পাকিস্তান শাসকদের হাত থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। যেটি বাংলা তথা বাঙালি জাতির একটি গৌরবের দিন। ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির হাজার বছরের বিরুদ্ধে এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন ১৬ই ডিসেম্বর। এই দিনে বাঙালি জাতি বিরের জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ ঘটায়।

১৬ই ডিসেম্বরের বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব ভূখণ্ডের নাম জানান দিয়েছিল। নিজ মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য ১৯৭১ সালে বাংলার দামাল ছেলেরা ঝাপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এবং বাংলার হাজারো মা-বোনদের সম্ভ্রমনে বিনিময়ে বাংলার বুকে যে বিষয় এর হাতছানি যাদের জন্য বাঙালি আজ সকলের মুক্ত মনের বাঁচার অধিকার পেয়েছে সেই সকল অপূর্ব নিউ ও আলোকিত মানুষদের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধা এবং সম্মান জ্ঞাপন করি।

হাজার হাজার বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে প্রাণের বিনিময়ে আমাদের আজকের এই বিজয়। বাংলার মাটিতে ইচ্ছুক হানি হয়েছিল কত মা বোনদের কি ভয়াবহই না দিন ছিল। এই ভয়াবহ দিনগুলো অতিবাহিত করে কত নির্যাতন সহ্য করে আমাদের জন্য ছিনিয়ে এনেছে এক টুকরো লাল সবুজের বাংলাদেশ। যেখানে আমরা স্বাধীনভাবে নিজ মাতৃভাষায় কথা বলতে পারব। নিজ স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারব। অন্যায়ের কোন দ্বার খোলা থাকবে না বাংলার মাটিতে। ঠিক এমনই স্বপ্ন দেখেছিল বাংলা জয়ের সারথিরা।


স্বাধীনতা কামী বাংলা দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে অস্ত্র তুলে নেয় নিজের কাঁধে। ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী, কামার, কুমার, জেলে, শ্রমিক, দিনমজুর সবাই এই লড়াইয়ে শরিক হয়েছিল। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্রগুলো। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যায় বীর বাঙালি ছেলেরা। ইতিমধ্যে বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছিল। অবশেষে নয় মাসের যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি বিজয় অর্জন করে।

বিজয় শব্দটির সাথে যে স্বপ্ন একদা এক দেশী বাসে দেখেছিলেন আজো তা বাস্তবে রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়নি। আপনারা লক্ষ্য করবেন পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, সহিংসতা রাজনৈতিক অগ্র উদ্যনা সামাজিক অবক্ষয় সন্ত্রাস ও সংঘাতের সশস্ত্র বিক্ষোভ আমাদের জাতীয় জীবনে নতুন উপসর্গ রূপে দেখা দিয়েছে। স্বাধীনতা লাভের প্রায় চার যুগ পর বর্তমানে অসংখ্য লোক ও শিক্ষা ও দারিদ্র কবলিত অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে।

এক কথায় আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে অর্থব্যবহার করে তুলতে পারেনি। বাঙালি জাতির বিজয় অর্জন করেছে ঠিকই তার সাথে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশও পেয়েছি। কিন্তু তার তাৎপর্যের সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ঘটাতে সক্ষম হয়নি বলে এদেশের জনগণের এখনো মুক্তি মেলেনি। তাই বর্তমান সময়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলোকে সঠিকভাবে পালনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলি। এই শপথ গ্রহণ করে আমরা আমাদের কার্যকলাপ গুলো পরিচালনা করবো।

বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য

আপনারা অনেকেই বিজয় দিবসের দশটি বাক্য সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য জানতে চেয়েছেন তাদের জন্যই আমরা এখন বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। চলুন তা জেনে নেই।
  • ১৯৭১ সালে নয় মাস যুদ্ধের পর আমরা এই দিনে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। যাকে আমরা বিজয় দিবস হিসাবে পালন করি।
  • ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত হয়।
  • ১৬ই ডিসেম্বর প্রতি বছর বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা ও বাদবিতীয় পণ্য দিয়ে গান, নৃত্য, ও অন্যান্য আনন্দের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
  • 16 ডিসেম্বরের এই দিনটি পালন করার জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আলোচনা করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে স্কুল কলেজে হয়ে থাকে।
  • বিজয় দিবস আমাদের দেশের একটি ঐতিহাসিক স্মৃতির অমর অংশ এবং এটি সুষ্ঠুভাবে পালন করা আমাদের প্রত্যেকটি নাগরিকের কর্তব্য।
  • 1971 সালের এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরা আত্মসমর্পণ করে এবং আমরা ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস অর্জন করি।
  • বিজয় দিবসের দিনে সকল স্কুলগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় বিশেষভাবে , তাছাড়াও কুচকাওয়াজ , সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ অনেক ধরনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
  • বিজয় দিবসের দিনে বাংলাদেশের সকল স্কুল কলেজ ছুটি থাকে , কিন্তু এই দিনে স্কুল কলেজের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা অনুষ্ঠানসভা অনুষ্ঠিত হয় , তাছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
  • তাছাড়াও এই বিজয়ের দিনে ঢাকা সাভারে গঠিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানো হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে।
  • ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের একটি অন্যতম গৌরবোর্জন , যার ফলে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আরো জানানো হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য সম্পর্কে। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস সম্পর্কে। আপনার কাছে যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করবেন এবং এই ধরনের তথ্যমূল করতে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url