দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় ও প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় ও প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
ভূমিকা
বর্তমান সময়ে এসে হাই প্রেসারে ভোগেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। এখন প্রায় সব সব মানুষই হাই প্রেসারে ভুগছেন। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। তাই আপনি হাই প্রেসার হলে কি করবেন এই সম্পর্কে জানতে চাইলে দয়া করে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। তাহলে আশা করি আপনি হাই প্রেশার যাবতীয় সকল তথ্য সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন।
হাই প্রেসারের লক্ষণ
- মাথা ব্যথা।
- একটি জিনিস ডাবল ডাবল দেখা। অর্থাৎ একটি জিনিস দুইটি করে দেখা অথবা চোখে ঝাপসা দেখা।
- ঘাড়ে ব্যথা হওয়া।
- বমি হওয়া।
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া।
- হাত-পা এবং পুরো শরীর কাঁপা।
- এছাড়াও মতিভ্রম হতে পারে।
হাই প্রেসার হলে কি কি হয়
- হৃদরোগ হতে পারে।
- হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে।
- এছাড়াও স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- কিডনির সমস্যা হতে পারে।
- শরীরের অথবা পায়ে রক্ত চলাচল কমে যেতে পারে।
- এছাড়াও আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ সিস্টেম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়
দ্রুত হাই প্রেসার কমাতে হলে আপনাকে প্রথমে যেই কাজটি করতে হবে সেটি হল আপনার দেহের ওজন কমানো। দেহের ওজন কম থাকলে শরীরের রক্তচাপ কম থাকে। যদি আপনার ওজন বৃদ্ধি পায় তাহলে আপনার শ্বাস নিতে সমস্যা হয় এবং রাতে ঘুম হয় না। যার কারণে হাই প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। তাই আপনি প্রতিদিন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। তেল এবং চর্বি জাতীয় খাবার আপনার ওজন বাড়িয়ে দেয় এই খামারগুলোকে প্রত্যাখ্যান করুন। প্রতিদিন ব্যায়াম এবং শরীর চর্চা করুন।
দ্রুত হাই পেশার কমাতে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খান। এতে করে আপনার শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়াও লবণ, চিনি এবং তৈলাক্ত জাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। এই খাবারগুলো কম খেলে আপনার প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর ক্ষেত্রে ব্যায়াম খুব কার্যকরী। কারণ আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ এবং সুন্দর।
যার কারণে আপনার প্রেসারে সমস্যা ও ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়াও অ্যালকোহল এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের এনার্জি ড্রিঙ্কস খাবেন না। এনার্জি ড্রিংসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি। আর এই চিনি আপনার প্রেসার অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাই দ্রুত হাই প্রেসার কমাতে উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চলুন।
হাই প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত না
হাই প্রেসার হলে সাধারণত লবণ খাওয়া যাবেনা। তাই আপনি চেষ্টা করবেন যতটুকু কম লবণ খেতে পারেন তত আপনার শরীরের জন্য ভালো। মাথায় রাখবেন ভাত খাওয়ার সময় আলাদাভাবে কোন কাঁচা লবণ একদমই খাবেন না। আপনি যে তরকারিগুলা খান ওইগুলার মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে। যার জন্য আপনি চেষ্টা করবেন খাবার অথবা তরকারিতে অল্প লবণ খাওয়ার। আপনার হাইপ্রেশার হলে তেল চর্বি এবং ফ্যাট জাতীয় খাবার অবশ্যই খাবেন না।
একটা কথা মাথায় রাখবেন সর্বোচ্চ আপনি দিনে তিন থেকে চার চা চামচের বেশি তেল একদমই খাবেন না। এই তেল মাছ, মাংস অথবা বিভিন্ন সবজির সাথেই হোক অথবা নাস্তার বিভিন্ন ভাজাপোড়া খাবারের সাথে। যদি আপনার ব্লাড প্রেসার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কম চিনি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। বিভিন্ন ধরনের এনার্জি ড্রিংসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।
হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
হাই প্রেসার কমানোর বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় রয়েছে। হাই প্রেসার কমাতে হলে শুরুতেই আপনাকে আপনার খাদ্যাভ্যাস পাল্টাতে হবে। অর্থাৎ আপনি দেখতেছেন যে খাবারগুলোতে আপনার প্রেসার হাই হয়ে যাচ্ছে সে খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। তার মধ্যে রয়েছে লবণ। লবণ আমাদের ব্লাড প্রেসারের মাত্রা অনেকটাই বেরিয়ে যায়। তার জন্য তরকারি অথবা বিভিন্ন খাবারে লবণ কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর অবশ্যই মনে রাখবেন ভাতে একদমই কাঁচা লবন খাবেন না।
অনেকে কাঁচা লবণ খেলে প্রেসার হাই হয়ে যাবে ভেবে লবণ ভেজে খায়। কাঁচা লবণ অথবা ভাজা লবণ কোন লবনই খাওয়া যাবে না। যতখানি পারবেন লবণ খাওয়া একদমই কমাই দিবেন। প্রথম প্রথম হয়তো কষ্ট হবে কিন্তু আস্তে আস্তে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। হাই প্রেসার কমানোর জন্য আপনাকে চিনি কম খেতে হবে। কারণ তিনি খেলে প্রেসার অনেক হাই হয়ে যেতে পারে। যার কারণে প্রতি সপ্তাহে খুব অল্প পরিমাণে চিনি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
হাই প্রেসার কমানোর জন্য তেল যত কম খাবেন ততই ভালো। খাবারের খুবই অল্প পরিমাণে তেল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই পরিশেষে বলা যায় হাই প্রেসার কমানোর জন্য এই ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলতে হবে। তাহলে আপনার প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। হাই প্রেসার কমানোর জন্য বেশি বেশি ফল ও শাক সবজি খাবেন। কারণ ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা হাই প্রেসার কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও হাই প্রেসার কমানোর জন্য দুধ এবং টক দই খেতে পারে। সবথেকে বেশি খাবেন লেবু।
কি কি খেলে প্রেসার কমে
- দিনে তার থেকে পাঁচটা মাঝারি সাইজের ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- প্রতিদিন দুই থেকে ৩ কাপ কাটা অথবা রান্না করা সবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- কারণ ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা হাই প্রেসার কমায়।
- প্রতিদিন অন্তত কিছু পরিমাণ দুধ এবং টক দই খেতে পারেন।
- কমলালেবু , আঙ্গুর এবং পাতি লেবু খেতে পারেন।
- চর্বি জাতীয় মাছ।
- কুমড়োর বীজ।
- বিভিন্ন ধরনের বেরি।
- পেস্তা বাদাম।
- টমেটো।
প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণ
- রোগীর মাথা ঘোরায়।
- শরীরে ক্লান্তি অনুভব হয়।
- শরীর দুর্বলতা দেখা দেয়।
- লো প্রেসার হলে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।
- মাথা ঝিমঝিম করা।
- হঠাৎ করে মাথা ঘুরে যায়।
- এছাড়াও হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
- বমি বমি ভাব।
- সব সময় পিপাসা পায় এবং গলা ঠোঁট এবং জিহাদ বা শুকিয়ে যায়।
প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে
- দিনে অন্তত এর থেকে দুইটি সিদ্ধ ডিম খেতে হবে।
- বেশি বেশি লবণ পানি খেতে হবে।
- কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে হবে।
- বিভিন্ন ধরনের ডার্ক চকলেট খেতে পারেন।
- প্রেসার লো হলে বেশি বেশি ওর স্যালাইন খাবেন।
- এছাড়াও কফি খেতে পারেন।
- প্রেসার লো হলে পুদিনা পাতা অথবা পুদিনা পাতার রস খেতে হবে।
- এছাড়াও প্রেসার লো হলে আপনি যষ্টিমধু খেতে পারেন।
- এক কথায় প্রেসার লো হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
- সেইজন্যে তরল জাতীয় বিভিন্ন খাবার খাবেন।
হঠাৎ প্রেসার লো হলে করণীয়
সাধারণভাবে বলতে গেলে হঠাৎ করে একজন মানুষের প্রেসার লো হয়ে গেলে কফি অথবা চা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে তা এবং কফিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন। যা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। তাই হঠাৎ লো প্রেসার হলে অবশ্যই চা এবং কফি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয় পান করবেন। যেমন স্যালাইন, সুপ ইত্যাদি তরল জাতীয় খাবার।
এছাড়াও হঠাৎ লো প্রেসার হয়ে গেলে পানির কোন বিকল্প নেই। অর্থাৎ আপনাকে বেশি বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে। হঠাৎ প্রেসার লো হয়ে গেলে আপনি বিভিন্ন লবণ জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তার কারণ হচ্ছে লবণে থাকা ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীরের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এই জন্য লবণ জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
এছাড়াও আপনাকে একটি রুটিন মেনে চলতে হবে। সহজ ভাবে বলতে গেলে সঠিক সময় খাবার খান এবং পুষ্টিকর খাবার খান। এছাড়াও হঠাৎ প্রেসার লো হয়ে গেলে আপনি তুলসী পাতা অথবা পুদিনা পাতার রস খেতে পারেন।
লো প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি
বর্তমান সময়ে এসে লো প্রেসার একটি ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অধিকাংশ মানুষের লো প্রেসারে ভুগি। লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে পানির কোন বিকল্প নেই। অর্থাৎ সহজ কথা বলতে গেলে আপনার যদি লো প্রেসার হয়ে থাকে তাহলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন। ডিহাইডেশনের কারণে লো প্রেসার হতে পারে। সেই জন্য যত পারবেন পানি পান করুন। পানি ছাড়াও অন্যান্য কোমল পানীয় পান করার চেষ্টা করুন।
যেমন, স্যালাইন, সুপ, চা এবং কফি ইত্যাদি।কজন মানুষের প্রেসার লো হয়ে গেলে কফি অথবা চা খাওয়ার চেষ্টা করবেন।কারণ গবেষণায় দেখা গেছে তা এবং কফিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন। যা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। প্রেসার বাড়ানোর জন্য আপনি লবণ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। কারণ লবণ আপনার শরীরে রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই বেশি পরিমাণে লবণ জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া উপায় হচ্ছে নিয়মিত খাবার খাওয়া। আপনি প্রতিদিনই নিয়মিত সময় মত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম ঠিক থাকবে। লো প্রেসার কমানোর জন্য আপনি মানসিক চিন্তা দূর করুন এবং শান্ত পরিবেশে থাকবার চেষ্টা করুন। যদি আপনার প্রেশারটি অনেক কমে যায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং পরামর্শ মত ওষুধ সেবন করুন। এছাড়াও খাবার পাওয়ার পরে সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াবেন না এবং কখনোই একটানা দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলুন ও মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিবেন।
কি কি খেলে প্রেসার বাড়ে
- সিদ্ধ ডিম।
- ডার্ক চকলেট।
- আঙ্গুরের রস।
- বিভিন্ন প্রকারের তরল পদার্থ অথবা পানীয়।
- পনির।
- ক্যাফিন।
- লিকার চা।
- লবণ জাতীয় খাবার।
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান।
লো প্রেসারে লেবু
লো প্রেসার কমাতে লেবু খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। সাধারণত আমাদের শরীরে তরলের পরিমাণ কম থাকলে আমাদের শরীরের রক্তচাপ কমে যেতে পারে। যার কারণে আমরা লো প্রেসারে ভুগি। লেবুর রস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরে পানির ঘাটতি কমে যায় এবং আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। লেবু পানি পান করলে আমাদের শরীরের ডিহাইড্রেশন দূর হয়ে যায়। যার কারণে লো প্রেসারে লেবু খুবই উপকারী একটি উপাদান। তাই লো প্রেসারে অবশ্যই লেবু পানি পান করুন।
শেষ কথা
এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় ও প্রেসার লো হলে কি খেতে হবে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url