রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় - শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়
শরীর গঠনের প্রধান উপাদান হচ্ছে রক্ত।আমরা সাধারণত অনেকেই রক্তশূন্যতায় ভোগী। কিন্তু রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় আমরা কোথাও খুঁজে পাই না। এই সম্পন্ন পোস্ট জুড়ে আমি রক্তশূন্যতা দূর করার বিভিন্ন উপায় এবং রক্তশূন্যতা কেন হয় এই সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। রক্তশূন্যতার দূর করতে এই সম্পন্ন পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। তাহলে আশা করি আপনার রক্তশূন্যতা দূর হয়ে যাবে।
এখনকার সময় এসে আমরা প্রায় সবাই রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকি। তাই আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমি রক্তশূন্যতা বিষয়ক সকল সমস্যা এবং সমাধান নিয়ে আলোচনা করব। রক্তশূন্যতা দূর করার বিভিন্ন উপায় জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ভূমিকা
আমরা সাধারণত রক্তশূন্য তাকে এমন একটি রোগ বলে থাকি যেখানে রক্তে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা কম থাকে এবং রক্তের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা কমে যায়। যার কারনে সেটাকে আমরা রক্তশূন্যতা বলে থাকি। রক্ত আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমি রক্তশূন্যতা দূর করার বিভিন্ন উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করব। তাই রক্তশূন্যতা দূর করতে সম্পন্ন পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। তাহলে আশা করি আপনার রক্তশূন্যতার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
রক্তশূন্যতা কেন হয়
সাধারণত আমাদের দেহে লাল রক্ত কণিকা অর্থাৎ আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে আমরা সেটাকে রক্তশূন্যতা বলে থাকি। তাহলে এক কথায় বলা যায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকার কারণে রক্তশূন্যতা হয়। মানুষের শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা 10 মিলিগ্রাম বা তার কম থাকলে আমাদের রক্তশূন্যতা হয়।
আরো পড়ুন: মাখন খেলে কি মোটা হয়
শরীরে যখন লোহিত রক্তকণিকা বেশি তৈরি হয় না তখনও আমাদের রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে। শরীরের রক্তের ঘাটতি হলে এটি যদি বেশি পর্যায়ে চলে যায় তাহলে একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বেশি রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে।
শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়
শরীরে রক্ত বৃদ্ধির জন্য আপনি বেঁদেনা অথবা ডালিম খেতে পারেন। কারণ এই বেদনাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। যেটি আমাদের শরীরে রক্তের কোষগুলো বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বেদনাতে যে পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে সেটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের শরীরকে রক্ত সংক্রান্ত রোগ থেকে মুক্তি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে রক্ত বৃদ্ধি করতে আঙ্গুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আঙ্গুরে ভিটামিন, পটাশিয়াম ,ক্যালসিয়াম এবং আয়রন রয়েছে। যেটি সেবন করলে শরীলে সব ধরনের পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। আর এর থেকে শরীরের রক্ত তৈরি হয় এবং এটি শরীরের রক্তের অভাবকে মিটায়। দ্বিতীয়ত যে দুইটি উপাদান আমাদের দেহে রক্ত বাড়ায় সেই উপাদান দুটি হলো গুড় এবং কাঁচা ছোলা। গুড় এবং কাঁচা ছোলা আমাদের দেহে রক্ত বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এগুলোর পাশাপাশি খেজুরও কিন্তু আমাদের রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ খেজুরে রয়েছে কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি সিক্স, ম্যাঙ্গানিজ, প্যারাথাণিক এসিড এবং আয়রন। আরেকটি উপাদান হচ্ছে গাজর। গাজর আমাদের শরীরের রক্ত বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই শরীরের রক্ত বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন গাঁজর কিংবা গাজরের জুস খান।
আরো পড়ুন: ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর নাম
বিটরুট হচ্ছে খুবই আশ্চর্যজনক একটি সবজি। যা আমাদের শরীরের রক্তশূন্যতা কমায় এবং আমাদের লিভারের সমস্যা কে সমাধান করে। এটি লিভারের কোষে জিংক এবং কপার এর আধিক্য বাড়ায়। আর কপার রক্তের লোহিত রক্তকণিকাকে নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের রক্ত বৃদ্ধির আরেকটি উপায় হল টমেটো খাওয়া। টমেটো শরীরের রক্তের পরিমাণ ঠিক রাখে এবং রক্ত সঞ্চালনকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
আপনি রক্ত বারানোর জন্য আরেকটি ফল খেতে পারেন সেটি হল লেবু জাতীয় ফল। যেমন, কমলা লেবুর, মালটা, ইত্যাদি ইত্যাদি লেবু। লেবু আমাদের শরীরের রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না এবং রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। তাই বলা যায় যে শরীরের রক্ত বৃদ্ধি করতে উপরের দেখানো খাবার গুলো খেতে পারেন।
গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় অনেক গর্ভবতী মায়েরা কিন্তু রক্তশূন্যতায় ভোগেন। এই সময়টাতে একজন গর্ভবতী মায়ের প্রচুর পরিমাণে আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। তাহলে তার রক্তশূন্যতা কমে যাবে। আয়রনযুক্ত খাবার গুলো হল, ডিম, কলিজা, মাংস ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।
এছাড়াও সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল এইগুলাতেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। সাধারণত একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন তৈরি হয় না। সেই জন্য তারা রক্তশূন্যতায় ভোগে। তাই গর্ভবতী মায়েরা রক্তশূন্যতা দূর করতে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন।
রক্তশূন্যতার লক্ষণ
শরীরের রক্তের ঘাটতি হলে অনেক ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। যেমন, মানুষের ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যায় রক্তশূন্যতার কারনে। এবং রক্তশূন্য তাহলে মানুষের শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। রক্তশূন্যতা হলে বুকে ব্যথা করে এবং বুক ধরফর অথবা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আর রক্তশূন্যতা হলে সারাদিন শরীর ক্লান্ত থাকা একটি লক্ষণ। তার সাথে সাথে মাথা ব্যাথা এবং মাথা ঘুরতে পারে।
যদি লক্ষণ গুলো দেখতে পান তাহলে খুব দ্রুত আপনার পার্শ্ববর্তী ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার শরীরের রক্তশূন্যতা পরীক্ষা করেন। ঠিকমতো চিকিৎসা করলে এই রক্তশূন্যতার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মেয়েদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ
মেয়েদের ক্ষেত্রে রক্তশূন্যতার লক্ষণ হচ্ছে মেয়েদের শরীর অনেক দুর্বল লাগবে এবং চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যাবে। সাধারণত মহিলারা সারাক্ষণ ঘুমাতে চাইবে। মানে সব সময় চোখে ঘুম লেগে থাকবে। তার সাথে সাথে মেয়েদের চুল পড়তে থাকবে এবং সর্দি কাশি ইত্যাদির অসুখ দেখা দেবে। তাই মেয়েরা এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অবশ্যই নিকটস্থ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কারণ মেয়েদের রক্তশূন্যতা বেশি হয় তার কারণ হচ্ছে পিরিয়ড। কারণ পিরিয়ডের সময় মেয়েদের শরীর থেকে অনেক রক্ত বের হয়ে যায়। যার কারণে ছেলেদের থেকে বেশি মেয়েদের রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। পরিশেষে বলা যায় যে এই লক্ষণ গুলা যদি দেখতে পান তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং রক্ত পরীক্ষা করুন।
বাচ্চাদের রক্তশূন্যতা দূর করার নানা উপায়
শরীরের গঠনের প্রধান উপাদান হচ্ছে রক্ত। আয়রনের অভাবে শিশুদের রক্তশূন্যতা হতে পারে। আর এই রক্তশূন্যতা হলে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ থমকে যেতে পারে। বাচ্চাদের রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য বাচ্চাদেরকে আস্তে আস্তে মাছ, মাংস, তাজা সবজি এবং বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খাওয়ানোর অভ্যাস করে তুলুন।
এতে শিশুর শরীরের আয়রনের ঘাটতি কমে যাবে। এছাড়াও শিশুদের রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য তাদেরকে আমিষ ,ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি টুয়েলভ, ভিটামিন সি এবং লোহ জাতীয় খাবার গুলো খাওয়াতে শুরু করে দিন। সাধারণত শিশুদের রক্তশূন্যতার প্রধান কারণ হচ্ছে কৃমি।
তাই কখনো শিশু শরীরে কৃমি হতে দিবেন না। তাই পরিশেষে বলা যায় যে বাচ্চাদের রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য উপরের নিয়ম গুলি মেনে চলুন।
শেষ কথা
আশা করি এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি রক্তশূন্যতা দূর করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। যদি এই পোষ্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url