দুঃখের মত এত বড় পরশপাথর আর নাই ভাবসম্প্রসারণ
শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনারা কি দুঃখের মত এত বড় পরশপাথর আর নাই ভাবসম্প্রসারণ সম্পর্কে জানতে চান বা পড়তে চান। তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের পোস্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য দুঃখের মত এত বড় পরশপাথর আর নাই ভাবসম্প্রসারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা যদি দুঃখের মত এত বড় পরশপাথর আর নাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।
দুঃখের মত এত বড় পরশপাথর আর নাই
ভাব-সম্প্রসারণঃ দুঃখের স্পর্শে মানুষের স্বীয়সত্তা ও অন্তর্গত শক্তি জাগ্রত হয়। দুঃখের মধ্য দিয়েই মানুষ সত্যিকার মনুষ্যত্ব লাভ করে। দুঃখের পরশেই মানুষের বিবেক পরিশুদ্ধ হয়।
দুঃখ মানুষের কাম্য নয়। কিন্তু তাই বলে জীবন শুধু নিরবচ্ছিন্ন সুখেরও নয়। দুঃখ ও সুখ জীবনের কঠিন বাস্তবতার এপিঠ-ওপিঠ। দুঃখের পরে সুখ আসে, দুঃখ নয়- এটাই চিরায়ত নিয়ম। দুঃখ ছাড়া প্রকৃত সুখ অর্জনের বিকল্প কোন পথ নেই। আগুনে পোড়ালে যেমন খাঁটি সোনার পরিচয় স্পষ্ট হয়, তেমনি দুঃখের দহন মানুষকে খাঁটি মানুষে পরিণত করে। আঘাতে আঘাতে, বেদনায় বেদনায় মানুষের মনুষ্যত্ববোধ, সত্যনিষ্ঠা ও বিবেকবোধ জাগ্রত হয়।
দুঃখে না পড়লে কোনো মানুষই জীবনের যথার্থ স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে না। মনীষীগণ তাই দুঃখকে পরশপাথরের সাথে তুলনা করেছেন। পরশপাথরের ছোঁয়ায় যেমন লোহা সোনায় পরিণত হয়, তেমনি। দুঃখের আঘাত অমানুষকে মহৎ মানুষে পরিণত করতে পারে। বেদনার অশ্রুতে যখন ভেসে যায় সমস্ত গ্লানি, তখন অপার্থিব এক পবিত্রবোধ জন্ম নেয় হৃদয়ে।
সেই পবিত্রবোধই তাকে সুন্দর করে, নতুন এক মানুষে পরিণত করে। দুঃখের স্পর্শ মানুষকে দুঃখ জয়ী হওয়ার শিক্ষা দেয়, সাহসী হওয়ার ভরসা দেয়, জীবনযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার দীক্ষা দেয়। দুঃখই মানুষের সকল দৈন্য দূর করে তাকে খাঁটি মানুষে পরিণত করে। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিবর্গের জীবনী পর্যালোচনা করলে এ-সত্যের প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। রুটির দোকানের নজরুল দুঃখ-দারিদ্র্যের এক বাস্তব উদাহরণ।
জীবন চলার প্রতিটি পর্যায়ে দুঃখ-দারিদ্র্য তাঁকে কুরে কুরে খেয়েছে। বিনিময়ে তাঁকে দিয়েছে প্রতিষ্ঠা। তাই তাঁর মুখে ফুটে উঠেছে-'হে দারিদ্র্য! তুমি মোরে করেছ মহান/তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীষ্টের সম্মান।' পৃথিবীর বহু মনীষী দুঃখকে বরণ করে নিয়েছিলেন বলেই আজও তাঁরা স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন। মহানবী হযরত মুহম্মাদ (স.), যিশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ প্রমুখ মহান ধর্মবেত্তা জীবনের প্রতিটি পদে দুঃখকে জয় করে সমগ্র মানব জাতির মঙ্গলের জন্য কাজ করে গেছেন।
সুখ-দুঃখ মানবজীবনের এক অনিবার্য ফসল। তবে বাস্তব জীবনে এমন অনেক বিষাদময় ঘটনা ঘটতে দেখা যায়, যা সাধারণ মানুষেকে মহৎ হৃদয়ের মানুষে পরিণত করে। স্রষ্টার পক্ষ থেকে দুঃখ একধরনের পরীক্ষা। দুঃখের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে সাধারণ মানুষ উত্তম মানুষে পরিণত হয়।
আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url