গলায় ক্যান্সারের যে ৫টি লক্ষণ না জানলেই নয়, গলায় ক্যান্সারের লক্ষণ জানা জরুরী

ক্যান্সার একটি ভয়াবহ রোগ। তাই আপনারা নিশ্চয়ই গলায় ক্যান্সারের ৫টি লক্ষণ - ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো জানুন ও ক্যান্সারের লক্ষণ জানতে আজকের পোস্টটিতে এসেছেন। তবে সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের পোস্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য গলায় ক্যান্সারের লক্ষণ ও ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব।
গলায় ক্যান্সারের ৫টি লক্ষণ - ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ
পোস্টসূচিপত্রঃসাধারণত আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার দেখা যায়। যেমন, ব্লাড ক্যান্সার, পেটের ক্যান্সার, গলায় ক্যান্সার, টিউমার ক্যান্সার এবং বেস্ট ক্যান্সার ইত্যাদি ধরনের ক্যান্সার আমাদের শরীরে দেখা যায়।
 

ভূমিকা 

সাধারণত ক্যান্সার আমাদের শরীরের অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি বলা হয় এই ক্যান্সার কে। আমাদের দেশে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার অনেক আকারে বেড়ে গেছে। সাধারণত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার ধরা ধরা পড়ে না। যার কারণে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভালো কোন চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না।
 
বাস্তবে এই সময়টাতে এসে ক্যান্সার রোগের কোন ওষুধ এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এগুলা নিয়ে গবেষণা চলছে আগামী কয়েক বছরে ক্যান্সারের নিরাময়ের কোন না কোন ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ভাই আপনাদের অবশ্যই ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো জেনে নিতে হবে। বিশেষ করে গলায় ক্যান্সারের লক্ষণ ও ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ জানতে হবে যা আমরা এই পোস্টে আলোচনা করেছি।

ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ

আমাদের দেশে ব্লাড ক্যান্সার আসলে এখন একটি আতঙ্কিত রোগের নাম। ব্লাড ক্যান্সার হচ্ছে আসলে রক্তের ক্যান্সার। আমাদের শরীরে ব্লাডের যে কোষগুলো রয়েছে ওই কোষ গুলোর ক্যান্সারকে আমরা ব্লাড ক্যান্সার বলে থাকি। সাধারণত ব্লাড ক্যান্সার অনেক ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা ব্লাড ক্যান্সারকে লিউকেমিয়া বলে থাকি। সাধারণত ব্লাড ক্যান্সার হলে রোগীর সেতু রক্তকণিকা শরীরে বেশি পরিমাণে তৈরি হয়।
 
ব্লাড ক্যান্সার এর লক্ষণ গুলো হলো আমাদের শরীর দুর্বলতা, আমাদের শ্বাসকষ্ট, হঠাৎ করে করে মাথা ঘোরা, আমাদের শরীরের ত্বক সাদা হয়ে যাওয়া এবং বুকে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায় এই ব্লাড ক্যান্সারে। আমরা জানি প্লেটলেট আমাদের শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি আমাদের শরীরে ব্লাড ক্যান্সার হয় তাহলে এই উপাদান আমাদের শরীরে বেশি তৈরি হতে দেয় না।
 
সাধারণত ব্লাড ক্যান্সার প্রথমে ধরা পড়লে এ চিকিৎসা করা যায় কিন্তু লাস্টে যে গিয়ে ধরা পড়লে এর কোন চিকিৎসা পাওয়া যায় না। আর ব্লাড ক্যান্সার হচ্ছে আমাদের শরীরে রক্তের কোণগুলোকে বাড়িয়ে তোলে। ব্লাড ক্যান্সার হলে রোগীর শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সক্ষম হয় না। তাই রোগীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়।
 
সাধারণত এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে রেডিয়েশন ও কেমো দিতে হবে। তাতে ব্লাড ক্যান্সারের রোগী মোটামুটি ভালো থাকবে আর যত তাড়াতাড়ি অসুধ ধরা পড়ে ততটাই ভালো। আরেকটি কথা মনে রাখবেন চিকিৎসা জগৎ এখন আধুনিক হয়ে গেছে। তাই ক্যান্সার হলে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না। আপনি বিশেষজ্ঞ ডক্টরের পরামর্শ নেন দেখবেন সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

পেটের ক্যান্সারের লক্ষণ

বর্তমানে পাকস্থলীর ক্যান্সার আমাদের দেশে প্রচুর মানুষকে আক্রান্ত করে চলেছে। সাধারণত ধূমপান এবং অ্যালকোহল এই দুইটি নেশার জিনিস পাকস্থলীর ক্যান্সার তৈরি হওয়ার জন্য সবদিক থেকে দায়ী ধরা হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রচুর ফাস্টফুড খাওয়া, নেশা জনিত পদার্থ নেওয়া, খারাপ খাদ্য অভ্যাস এবং মসলা জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার জন্য পাকস্থলের ক্যান্সার বেশি দেখা দেয়। এই পাকস্থলীর ক্যান্সারকে বলা হয় 3A যার মানে এমিনিয়া এবং এস্তেনিয়া প্রভৃতি লক্ষণের মাধ্যমে বোঝা যায় যে এটি পাকস্থলীর ক্যান্সার।
 
আর এটা লক্ষণ হচ্ছে দেখা যাচ্ছে রোগীর ওজন কমে যাচ্ছে সাধারণত না খেতে পারার জন্য। শরীরে রক্তশূন্যতা এর জন্য রোগীর শরীর একদম সাদা হয়ে যাচ্ছে। সবশেষে আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবনতি হচ্ছে। যেমন, রোগীর পেট ফুলে যাচ্ছে, পায়খানার সাথে রক্তপাত হচ্ছে অথবা কালো পায়খানা হচ্ছে, বমির সঙ্গে রক্ত বের হচ্ছে। এই লক্ষণগুলো সবই কিন্তু পাকস্থলীর ক্যান্সার এর লক্ষণ। যদি আপনার এরকম লক্ষণ হয়ে থাকে তাহলে খুব দ্রুত একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
 
আল্ট্রাসনোগ্রাফি এবং সিটি স্ক্যান এর মাধ্যমে পাকস্থলীর ক্যান্সার ধরা পড়ে। সাধারণত প্রথম দিকে রোগীকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। আরে কেমোথেরাপি দিলে পাকস্থলীর ক্যান্সারটি ছোট হয়ে যায়। তারপরেও সেটা অপারেশন করে বের করে আনা হয়। তাহলে পাকস্থলীর ক্যান্সার একদম নিরাময় হয়ে যায়। কিন্তু যদি রোগী লক্ষণগুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকে পরে লাস্টে যে যদি আসে ডক্টরের কাছে তাহলে সেই রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তাই প্রথম লক্ষণ গুলা হওয়ার সাথে সাথে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ক্যান্সারের পরীক্ষা করুন।

গলায় ক্যান্সারের লক্ষণ

গলার ক্যান্সার এর মূল কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ধূমপান। অতিরিক্ত ধূমপান করার কারণে গলার ক্যান্সার তৈরি হয়। ধূমপান ছাড়াও পুষ্টিহীনতার জন্য এই গলার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গলায় ক্যান্সার হলে প্রথমত রোগীর গলার স্বর চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে। রোগী দেখলো হঠাৎ করে তার গলার স্বর চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে এবং সেটা তিন থেকে চার সপ্তাহের বেশি পছন্দ রয়ে যাচ্ছে।
 
এছাড়াও গলায় কাটা কাটা অনুভব হয়, এমনকি গলা ব্যথা শুরু হচ্ছে নানা ওষুধ খেয়ে ভালো হচ্ছে না এবং খাবার গিলতে সমস্যা হচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে এটি গলার ক্যান্সার এর লক্ষণ। আরেকটি প্রধান কারণ যেটি হল গলার কাছে একটু ফুলে গেছে কিন্তু সেখানে খুব বেশি ব্যথা নাই তাহলে বুঝতে হবে এটি গলার ক্যান্সার এর লক্ষণ।
 
যদি আপনার এই লক্ষণ গুলো দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে খুব দ্রুত একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিন এবং ক্যান্সার পরীক্ষা করুন। আর ভয় পাওয়ার কিছু নাই এগুলো প্রবলেম দেখা দিলেই যে ক্যান্সার ধরা পড়বে এমন কিছু নয়। কিন্তু এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
 
এই গলার ক্যান্সার যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসা অর্থাৎ কেমোথেরাপি দিলেই ক্যান্সার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যদি লাস্ট পর্যায়ে গিয়ে আপনি খেয়াল করেন তখন আর সেই রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে 70 থেকে 80 পার্সেন্ট সম্ভাবনা থাকে রোগীর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাওয়ার।

টিউমার ক্যান্সারের লক্ষণ

সাধারণত টিউমার থেকে টিউমার ক্যান্সারের উপলব্ধি হতে পারে। খুব কম সংখ্যক টিউমার থেকে টিউমার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত টিউমার হলে ওই জায়গাটি ফুলে ওঠে। প্রথমত রোগী বুঝতে পারবে যে তার মুখের কোন একটি জায়গায় কিছুটা জায়গা ফুলে গেছে। আবার এই টিউমারটি ব্যথাযুক্ত অথবা ব্যাথা ছাড়াও হতে পারে। টিউমার ক্যান্সার এর লক্ষণ বলতে দেখা যায় রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাথাহীন টিউমার হয়ে থাকে।
 
সাধারণত রোগীর মুখে, মাড়িতে ঘা হয়ে থাকে এবং এটি চিকিৎসা করার পরও কমছে না। তাহলে বুঝতে হবে এটি ক্যান্সার এর লক্ষণ। প্রধান যে কারণটি হচ্ছে কোন কারণ ছাড়াই শরীলের ওজন কমতে থাকবে। এবং রোগীর অরুচি দেখা দিবে, খিদা একদম কমে যাবে এবং বেশিরভাগ সময় বমি বমি ভাব হবে। আরো যে প্রবলেম গুলা দেখা দেয় সেগুলো হল শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালশিটে দাগ দেখা দিবে অথচ ওইখানে কোন ব্যথা নাই।
যদি এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে দেরি না করে অবশ্যই ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আর দুই চিন্তার কোন কারণ নাই এগুলো লক্ষণ দেখা দিয়েছে বলে যে আপনার ক্যান্সার হবে এমন কিন্তু না। তাই এই প্রবলেম গুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিবেন। কারণে ক্যান্সার শুরুতে ধরা পড়লে এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গিয়ে যদি ধরা পড়ে তাহলে রোগীর বাসায় সম্ভাবনা খুব কম থাকে। তাই সতর্ক থাকুন।
ব্রেস্ট ক্যান্সার অর্থাৎ স্তন ক্যান্সার। এই ক্যান্সার টি প্রতিনিয়ত অনেক মানুষকে আক্রান্ত করে চলেছে। এই ক্যান্সার টি সাধারণত মহিলাদের হয়ে থাকে। এই ক্যান্সারটি সঠিক সময়ে ধরা পড়লে এটি একদম সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা যায়। আর এই ক্যান্সার টি হওয়ার পরও যদি রোগী অবহেলা করে তাহলে এটি রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। স্তন ক্যান্সার সাধারণত দেখা দেয় মহিলার একটি স্তনে অথবা দুইটি স্তনে। এবং বগলের বিভিন্ন অংশ ফোলার কারণে।
আরো পড়ুনঃ
এছাড়াও রোগীর যে প্রবলেমটি দেখা যায় সেটি হল রোগীর স্তন দিয়ে লাল অথবা সবুজ রঙের লাভা বের হওয়া। এই রোগটি সাধারণত ব্যাথা হীন হয়ে থাকে এবং রোগীর স্তনে ঘা বা কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় না সেই জন্য রোগীটি অবহেলা শুরু করে। যখন রোগটি বেড়ে যায় তখনই ডক্টরের পরামর্শ নিতে যান। সাধারণত মহিলারা তখনই যান যখন তাদের স্তন ব্যথা শুরু হয় এবং নিয়মিত স্তন দিয়ে রক্ত বের হয় অথবা মেয়েদের স্তনে ঘা হয়ে গেছে।
 
তাই পরিশেষে বলা যায় যে, যদি আপনি প্রথমত লক্ষণগুলো দেখতে পারেন যেমন স্তনের মাঝে একটু ফুলে গেছে বা বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট লক্ষণ। এই লক্ষণ গুলা দেখতে পেলেই আপনি একজন স্তন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তা না হলে পরবর্তীতে এটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। লক্ষণ গুলো খেয়াল করুন এবং সতর্কতা অবলম্বন করুন।

ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ

  • সাধারণত আলোর বৃদ্ধি বা কমে চোখের পিউপিল কাজ করে না 
  • রোগীর কথা বলার সময় মুখ ও জিহবার প্রতিক্রিয়া কমতে শুরু করে 
  • রোগীর দৃষ্টি শক্তি কমে আসে অর্থাৎ চোখে কম দেখা শুরু করে 
  • রোগীর নাট থেকে ঠোঁট পর্যন্ত যে রেখা পড়ে তাতে ব্যাপক পরিমাণে ভাঁজ পড়ে যেতে থাকে 
  • সাধারণত মাথা সামনের দিকে নুইয়ে পড়ে 
  • সাধারণত রোগীর গলার মধ্যে থেকে গড় গড় আওয়াজ বের হয় 
  • রোগীর প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয় 
  • গবেষণায় দেখা গেছে এই লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেলে সেই ক্যান্সারের রোগী তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে মারা যায় 

শেষ কথা

এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি ক্যান্সার বিষয়ক সকল বিষয়ে ধারণা পেয়ে গেছেন। যদি এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সমস্যা সমাধান পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url